Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব

মুক্তিযোদ্ধা  বীর প্রতীক  তারামন বিবি                                                                           

বাংলাদেশের দুইজন বীর প্রতীক খেতাব প্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধার একজন কুড়িগ্রামের তারামন বিবি। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি কুড়িগ্রাম জেলায় নিজ গ্রাম শংকর মাধবপুরে ছিলেন। তিনি ১১ নং সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন যার সেক্টর কমান্ডার ছিলেন আবু তাহের বীর উত্তম। 

মুক্তিযুদ্ধে যোগদান: তারামন মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন মুহিব হাবিলদার নামে এক মুক্তিযোদ্ধার উৎসাহে। তিনি তারামনের গ্রামের পাশের একটি ক্যাম্পের দ্বায়িত্বে ছিলেন। তারামনের বয়স যখন মাত্র ১৩ কিংবা ১৪ তখন তিনিই তারামনকে ক্যাম্পে রান্নাবান্নার জন্য নিয়ে আসেন। কিন্তু পরবর্তীতে তারামনের সাহস ও শক্তির পরিচয় পেয়ে মুহিব হাবিলদার তাকে অস্ত্র চালনা শেখানো শুরু করেন। তারামন রাইফেল ও স্টেনগান চালানো শিখেছিলেন।

সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহন: একদিন দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় তারামন ও তার সহযোদ্ধারা জানতে পারলেন পাকবাহিনীর একটি গানবোট তাদের দিকে আসছে। তারামন তার সহযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধে অংশ নেন এবং তারা শত্রুদের পরাস্ত করতে সক্ষম হন। তিনি ১১ নম্বর সেক্টরে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিকদের সঙ্গে কুড়িগ্রাম জেলার নদী-তীরবর্তী অঞ্চল মোহনগঞ্জ, তারাবর, কোদালকাটি ও গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়িতে অগ্রবর্তী দলের হয়ে কয়েকটি সশস্ত্র যুদ্ধে বীরত্বের সাথে অংশগ্রহণ করেন। রাজিবপুর রণাঙ্গনে কিশোরী তারামন নির্ভয়ে ও দক্ষতার সাথে গোয়েন্দাবৃত্তির কাজ করেছিলেন। খাড়িয়াভাঙ্গা ও ভেলামারি খাল এলাকায় পাক ঘাঁটির অবস্থান সম্পর্কে তাঁর সংগৃহীত নির্ভুল তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছে সফল অভিযান। তারামন অনেক যুদ্ধে পুরুষ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে অংশ নেন। তারামন কখনই নিজের জন্য ভাবেননি। অনেক বার তাদের ক্যাম্প পাকবাহিনী আক্রমন করেছে, তবে ভাগ্যের জোরে প্রতিবারই তিনি বেঁচে যান।

পুরস্কার ও সন্মাননা: ১৯৭৩ সালে তৎকালীন বঙ্গবন্ধুর সরকার মুক্তিযুদ্ধে তারামন বিবির সাহসীকতা ও বীরত্ব পূর্ণ অবদানের জন্য তাঁকে “বীর প্রতীক” উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু এরপর ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তাঁকে খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। ১৯৯৫ সালে ময়মনসিংহের একজন গবেষক প্রথম তাঁকে খুঁজে বের করেন এবং নারী সংগঠনগুলো তাঁকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। সেই সময় তাঁকে নিয়ে পত্রিকায় প্রচুর লেখালেখি হয়। অবশেষে ১৯৯৫ সালের ১৯শে ডিসেম্বর এক অনাড়ম্বর পরিবেশে আনুষ্ঠানিক ভাবে তারামন বিবিকে বীরত্বের পুরস্কার তাঁর হাতে তুলে দেয়া হয়।